আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান মামলাগুলোর রায় না আসা পর্যন্ত আওয়ামী লীগসহ এর অঙ্গ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সব কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র অবগত রয়েছে এবং তারা গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার প্রতি তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ১৩ মে মঙ্গলবার, এক প্রশ্নের উত্তরে দপ্তরের উপ-মুখপাত্র টমি পিগট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না, বরং তারা ন্যায়বিচার, আইনের শাসন এবং প্রত্যেক নাগরিকের অধিকারকে গুরুত্ব দেয়। তিনি আরও বলেন, সব দেশের প্রতি আমাদের আহ্বান—তারা যেন মতপ্রকাশ, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ এবং সংগঠনের স্বাধীনতাকে সম্মান করে। ব্রিফিংয়ে আরেক প্রশ্নকারী দাবি করেন, বাংলাদেশে উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদের প্রতি সমর্থন বাড়ছে এবং সরকারের একজন উপদেষ্টার সঙ্গে লস্কর-ই-তইয়্যেবা গোষ্ঠীর বৈঠক হয়েছে, এমনকি কাশ্মীর ইস্যুতে সহিংসতা উসকে দিচ্ছে কিছু রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতা। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে টমি পিগট বলেন, আগেই দেওয়া তাদের সার্বিক অবস্থানই যথেষ্ট—এ বিষয়ে আর কিছু যোগ করার নেই। তিনি উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে ৫০ বছরের সম্পর্ককে মূল্য দেয় এবং এই অংশীদারিত্ব আরও গভীর করতে বর্তমান সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। এদিকে, আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে ভারত সরকার। টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ১৩ মে সন্ধ্যায় দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, কোনো সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যা গভীর উদ্বেগের বিষয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিসর যেভাবে সংকুচিত হচ্ছে তা একটি গণতান্ত্রিক দেশের জন্য হতাশাজনক। ভারত সরকার দ্রুত একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে তাদের জোরালো অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে। উল্লেখ্য, ১২ মে বিকেলে সরকারের পক্ষ থেকে একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ও সংশ্লিষ্ট সব সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় এবং রাতেই নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন স্থগিত করে।