**বিডিআর ট্র্যাজেডি: পিলখানার ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক নেতাদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ**
২০০৯ সালে পিলখানায় সংঘটিত বিডিআর বিদ্রোহ ও হত্যাকাণ্ড নিয়ে নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে রাজনৈতিক প্রভাবের প্রসঙ্গ। মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বোরহান উদ্দিন জানিয়েছেন, এই ঘটনায় সাবেক মেয়র ও বর্তমান সংসদ সদস্য ফজলে নূর তাপসের নেতৃত্বে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই বৈঠকে বিডিআর সদস্যদের পক্ষ থেকে আলোচনায় অংশ নেওয়া হয় এবং সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে সেনা সদস্যরা পিলখানা ত্যাগ করবে এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য তাপস এমপি বিডিআরের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করবেন। আইনজীবী জানান, এই মিটিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক, মির্জা আজম ও মাহবুব আরা গিনি। অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর (অব.) জাহিদি আহসান হাবিব এই বিষয়ে আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন। তিনি বলেন, ঘটনার দিন সকালে দরবার হলের দক্ষিণ দিক দিয়ে সিপাহি মইন ও কাজল অস্ত্রসহ মঞ্চে প্রবেশ করে। মইন গুলি চালাতে চাইলেও বিগ্রেডিয়ার বারি তাকে ধরে ফেলেন। এ সময় কাজল বাইরে গিয়ে ফাঁকা গুলি চালায়। দরবার হলের ভিতরে থাকা সৈনিকরা উত্তেজিত হয়ে বাইরে ছুটে যায় এবং গোলাগুলি ও বিস্ফোরণ শুরু হয়। তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা কর্মকর্তা মেজর মইনকে ফোন করেন। মইন জানান তিনি প্রধানমন্ত্রীর সাথে আছেন এবং শাকিল আহমেদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। শাকিল আহমেদ তখন শেখ হাসিনাকে জানাচ্ছিলেন যে কিছু সৈনিক বিদ্রোহ করছে এবং সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। দৃশ্যপট আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে যখন দরবার হলে ১০-১২ জন সশস্ত্র সৈনিক প্রবেশ করে এবং তারা হামলা চালাতে থাকে। মেজর হাবিব বলেন, তিনি আত্মরক্ষার্থে তাদের শান্ত থাকার অনুরোধ করেন ও নিজেকে পরিচয় দেন। কিন্তু তাতেও কিছু সৈনিক ক্ষান্ত হয়নি। তাকে মারধর করা হয় এবং গুরুতর আহত করা হয়। পরে সুবেদার মেজর নুরুল ইসলাম তাকে রক্ষার চেষ্টা করলে তিনিও আহত হন। সাক্ষ্যে আরও উল্লেখ করা হয়, বিকেলের দিকে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে বিদ্রোহী জোয়ানরা মেজর হাবিবকে 'স্যার' সম্বোধন করে সম্মান দেখায় এবং আলোচনার প্রস্তাব দেয়। এরপর একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যার মূল আলোচ্য বিষয় ছিল সেনাবাহিনীর পিলখানা ত্যাগ এবং নতুন নেতৃত্বে বিডিআরের দায়িত্ব বণ্টন। -