গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা ও গণহত্যার প্রতিবাদে সোমবার সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি চলার মধ্যেই বিভিন্ন স্থানে ফাস্টফুড চেইন কেএফসি ও পিৎজা হাটের বিক্রয়কেন্দ্রে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। ইসরায়েলি মালিকানাধীন বলে এই চেইনশপের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হলেও মূলত  কেএফসি  যুক্তরাষ্ট্রের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।

কেএফসি বা কেন্টাকি ফ্রাইড চিকেনের প্রতিষ্ঠাতা হারল্যান্ড ডেভিড স্যান্ডার্স নামে যুক্তরাষ্ট্রের একজন নাগরিক। তিনি মূলত যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকিতে একটি রেস্টুরেন্ট চালাতেন, যেখান তিনি ফ্রাইড চিকেন বিক্রি করতেন। সেটা গত শতকের ত্রিশের দশকের কথা। ১৯৩৯ সালে স্যান্ডার্স ১১টি মসলার সমন্বয়ে একটি বিশেষ রেসিপি তৈরি করেন, যা আজও কেএফসির খাবার তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে। ১৯৫২ সালে স্যান্ডার্স যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহতে প্রথম কেন্টাকি ফ্রাইড চিকেন নামে ফ্র্যাঞ্চাইজির যাত্রা শুরু করেন।

ব্যবসা যখন ক্রমেই বাড়তে থাকে, তখন স্যান্ডার্স ১৯৬৪ সালে জন ওয়াই ব্রাউন জুনিয়র ও জ্যাক সি ম্যাসির নেতৃত্বে একদল বিনিয়োগকারীর কাছে ২ মিলিয়ন ডলারে কেএফসি বিক্রি করে দেন। তবে সেই বিক্রয় চুক্তিতে কেএফসির লোগোতে স্যান্ডার্সের ছবি ও তাকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর রাখার শর্ত থাকে। এরপর ১৯৭১ সালে জন ওয়াই ব্রাউন জুনিয়র ও জ্যাক সি ম্যাসি কেএফসিকে হিউবলেইন নামের একটি খাদ্য ও পানীয় কোম্পানির কাছে ২৮৫ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি করেন।

এখানেই শেষ নয়, ১৯৮২ সালে আবারও পরিবর্তন হয় কেএফসির মালিকানা। এবার হিউবলেইনকে কিনে নেয় আর জে রেনল্ডস নামের একটি তামাক কোম্পানি। এতে কেএফসির মালিকানাও চলে যায় রেনল্ডসের কাছে। ১৯৮৬ সালে আরেক দফায় মালিকানা পরিবর্তনের মুখে পড়ে কেএফসি। সে সময় আর জে রেনল্ডস তাদের খাদ্য বিভাগ যুক্তরাষ্ট্রের পানীয় কোম্পানি পেপসিকোর কাছে বিক্রি করে দেয়, যার মধ্যে কেএফসিও ছিল। পেপসিকোর অধীনে কেএফসির পাশাপাশি পিৎজা হাট ও টাকো বেলও ছিল। এরপর ১৯৯৭ সালে পেপসিকো তাদের রেস্তোরাঁ বিভাগকে একটি নতুন কোম্পানি হিসেবে আলাদা করে দেয়, যা প্রথমে ট্রাইকন গ্লোবাল রেস্তোরাঁস নামে পরিচিত ছিল। ২০০২ সালে ট্রাইকন গ্লোবাল রেস্তোরাঁস-এর নাম বদলে করা হয় ‘ইয়াম! ব্র্যান্ডস’। বর্তমানে কেএফসি ‘ইয়াম! ব্র্যান্ডস’-এর একটি অংশ। বাংলাদেশে কেএফসির পথচলা শুরু হয় ২০০৬ সালে।